সকল সংবাদ

মামুনুল ও ফয়জুলের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী ছাত্রদের স্বীকারোক্তি, গ্রেফতার ৪

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দু’জন মাদ্রাসার শিক্ষক ও দু’জন মাদ্রাসার ছাত্র। 

পুলিশ বলছে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই দুই মাদ্রাসাছাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন (২৭) ও মো. ইফসুফ আলী (২৬) এবং একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)। 

শিক্ষক মো. আল আমিনের বাড়ি জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামে, বাবার নাম আবদুর রহমান ও অপর শিক্ষক মো. ইফসুফ আলীর বাড়ি পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকায়, বাবার নাম আজিজুল মণ্ডল। মাদ্রাসাছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুনের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামে, বাবার নাম সমসের মৃধা ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের বাড়ি জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকায়, বাবার নাম মো. সামছুল আলম।

মামুনুল ও ফয়জুলের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী ছাত্রদের স্বীকারোক্তি, গ্রেফতার ৪
মামুনুল ও ফয়জুলের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী ছাত্রদের স্বীকারোক্তি, গ্রেফতার ৪

রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান। এসময় অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম নাহিদুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসাছাত্র আবু বক্কর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম নাহিদ তাদের মাদ্রাসা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সাদা পাঞ্জাবী, পাজামা ও কালো কোট পরা ওই দুই ছাত্র মই বেয়ে ভাস্কর্যের বেদিতে ওঠে। পরে একজনের ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালায়। মিশন শেষ করে তারা একইভাবে হেঁটে মাদ্রাসায় ফিরে বিষয়টি দুই শিক্ষককে (গ্রেপ্তার হওয়া) জানায়। এ সময় শিক্ষকরা ওই ছাত্রদের মাদ্রাসায় না থেকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে জানান ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ওই মাদ্রাসা থেকে হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে, যাতে সাদা রঙ লেগেছিল।’ 

ডিআইজি আরও বলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি দল অভিযান চালিয়ে মিঠুন ও নাহিদকে তাদের তাদের গ্রাম থেকে রোববার গ্রেপ্তার করে।

এর আগে রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় চারজন কে আটক করার কথা সাংবাদিকদের জানান।

শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশ ভাঙচুর করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যে কুষ্টিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনায় দেশব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।

এসি/স্টাফ রিপোর্টার/বে অব বেঙ্গল নিউজ/Bay of bengal news/বিবিএন।

বে অব বেঙ্গল নিউজ - Bay of Bengal News

বে অব বেঙ্গল নিউজ