টাইগাররা এগিয়ে ৩১২ রানে || বাংলাদেশ-শ্রীলংকা টেস্টের তৃতীয় দিনের সমাপ্তি
পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে করা বাংলাদেশের পাহাড়সম রানের সামনে লড়তে নেমেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) তৃতীয় দিনের শেষ বিকেল একদমই খারাপ যায় নি মুমিনুলদের। বোলাররা তুলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট। তার আগে দ্বিতীয় সেশনের শেষ বলে একটি উইকেট। সবমিলিয়ে শেষের সময়টায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে টাইগারদের।
পড়ন্ত আলোয় আসা সুযোগগুলো বাংলাদেশ কাজে লাগাতে না পারায় ৩ উইকেটে ২২৯ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। এর আগে ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে ইনিংস ঘোষণা করা বাংলাদেশ এখনো এগিয়ে আছে ৩১২ রানে।
চা পানের বিরতির ঠিক আগের বলে শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটিটি ভাঙে বাংলাদেশ। দুর্দান্ত এক ওভারের শেষ বলে হাফসেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরের ঠিকানা ধরিয়ে দেন মিরাজ। পুরো সেশনে বাংলাদেশের সাফল্য ছিল এই উইকেটটিই।
অথচ থিরিমান্নে ফিরতে পারতেন আরো আগে। ইনিংসের ৩৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রিভিউ না নেয়াটায় কাল হয়েছে টাইগারদের। তাইজুল ইসলামের করা টার্নিং ডেলিভারিটি আঘাত হানে বাঁহাতি ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নের পায়ে। কিন্তু আম্পায়ার আউট দেননি।পরে অবশ্য রিভিউর অপশন থাকলেও নেয়নি বাংলাদেশ।
পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, সেই বলটি আঘাত হানত লেগ স্ট্যাম্পে। রিভিউ না নেয়ার হতাশায় ডুবতে হয় বাংলাদেশকে। তখন মাত্র ৫৮ রানে ব্যাট করছিলেন থিরিমান্নে। পরে সেশন শেষ হওয়া পর্যন্ত আর কোনো রান যোগ করতে পারেননি তিনি।
থিরিমান্নে ফেরার পর ওসাদা ফার্নান্ডোও সেট হয়ে গিয়েছিলেন অনেকটা। পরে ২০রানে ব্যাট করার সময় তাসকিন আহমেদের বলে তাকে উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরে ফিরিয়েছেন লিটন দাস। এরপর বিশের ঘরে পৌঁছে আরও এক ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরেছে স্বাগতিকদের। ২৫ রানে অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজকেববোল্ড করেছেন তাইজুল ইসলামে এক অসাধারণ ঘূর্ণি ডেলিভারিতে।
তবে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের ধৈর্যে বাধতে পারেননি টাইগার বোলাররা। লঙ্কান দলপতি আছেন সেঞ্চুরির কাছাকাছি। ২১১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৮৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন তিনি।অপর প্রান্তে২৬ রান নিয়ে ব্যাট করছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
৭ উইকেট হারিয়ে ৫৪১ রানে এর আগে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। দিনের পঞ্চম ওভারেই দলীয় ৫০০ রান পূরণ করে বাংলাদেশ। এর সঙ্গেই যেন মেলে না হারার নিশ্চয়তা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোনো দলের ৫০০ রান করা মানেই, ম্যাচের ফলাফল হয় ড্র নয়তো লঙ্কানদের পরাজয়। চলতি ম্যাচের আগে ৫২ বার প্রতিপক্ষকে ৫০০ রান করতে দেখেছে লঙ্কানরা। যেখানে তারা হেরেছে ২৯ ম্যাচে, ড্র হয়েছে বাকি ২৩ ম্যাচ।
আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫৩তমবারের ৫০০ রান করলো কোনো দেশ। ম্যাচের গতি-প্রকৃতি বিবেচনায় ড্র-ই হতে পারে সম্ভাব্য ফলাফল। তবে দারুণ বোলিং করতে পারলে হয়তো ম্যাচ জিতেও নিতে পারে বাংলাদেশ।
প্রথম সেশনের ৩৫ মিনিট বাকি থাকতে ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। পরিকল্পনা ছিল মধ্যাহ্ন বিরতির আগে অন্তত ১-২টি উইকেট তুলে নেয়া। সে লক্ষ্যে বিরতির আগে মাত্র ৮ ওভারেই চারজন বোলার ব্যবহার করেছেন মুমিনুল। কিন্তু মেলেনি সফলতা। পরে দ্বিতীয় সেশনের ২৮ ওভারে এসেছে ১টি উইকেট। তবে এর আগে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি লাহিরু থিরিমান্নে। চা পানের বিরতির ঠিক আগের বলে তিনি আউট হন ৫৮ রানে।
সকালে ৪ উইকেটে ৪৭৪ রান নিয়ে খেলা শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। দিনের ১৮ ওভার ব্যাটিং করে ৩ উইকেট হারিয়ে আরো ৬৭ রান যোগ করতে পেরেছে সফরকারিরা। আজ ফিফটি করেছেন মুশফিকুর রহীম ও লিটন দাস। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৬৮ রান করে।
