সকল সংবাদবিনোদন

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের
না-ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ অভিনেতা নাট্যজন আলী যাকের আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই অভিনেতা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর। তিনি জানান, শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আলী যাকেরের মরদেহ বেলা ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেওয়া হবে। এরপর দাফন। তবে কোথায় দাফন হবে, এখনো সেটা ঠিক হয়নি।

বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন আলী যাকের। সেই চিকিৎসার অংশ হিসেবে নিয়মিত থেরাপি চলছিল তাঁর। গত সপ্তাহে শারীরিক সমস্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। কিছুটা সুস্থ হলে গত শনিবার বাসায় নেওয়া হয়। রোববার আবার ভর্তি করানো হয়। সোমবার কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হয়। ফলাফল হাতে পেলে জানা যায়, তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ।

আলী যাকের ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ওই বছরেরই জুন মাসে তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। তখন থেকে নাগরিকই তাঁর ঠিকানা। ‘বাকি ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘কোপেনিকের ক্যাপটেন’, ‘গ্যালিলিও’, ‘ম্যাকবেথ’সহ অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকের অভিনেতা ও নির্দেশক তিনি। পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেও তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি’, ‘পাথর’, ‘দেয়াল’সহ বহু নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন আলী যাকের। বেতারে ৫০টির বেশি নাটক করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন বেশ কিছু চলচ্চিত্রে।

টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক লিখেছেন। নানা বিষয়ে দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেছেন দীর্ঘদিন। প্রকাশিত হয়েছে বই—‘সেই অরুণোদয় থেকে’, ‘নির্মল জ্যোতির জয়’। শখ করে ফটোগ্রাফিও করেন তিনি।

আলী যাকের নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পূর্ণ সদস্য। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রুপের চেয়ারম্যান তিনি। স্ত্রী স্বনামধন্য অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের, ছেলের বউ মিম রশিদ, নাতনি নেহা ও মেয়ে শ্রেয়া সর্বজয়াকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। সব ছেড়ে আজ সকালে তিনি পাড়ি দেন না–ফেরার দেশে।

মো ইমাম হোসেন আসিফ
স্টাফ রিপোর্টার/বে অব বেঙ্গল নিউজ /Bay of bengal news /বিবিএন

বে অব বেঙ্গল নিউজ - Bay of Bengal News

বে অব বেঙ্গল নিউজ