সকল সংবাদজাতীয়স্বাস্থ্য

করোনা যুদ্ধে বিশ্বের কাছে অন্য রকম কদর পাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প

করোনা যুদ্ধে বিশ্বের কাছে অন্য রকম কদর পাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প। বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক ওষুধের চাহিদা বাড়তে শুরু করে বাংলাদেশে।

করোনা যুদ্ধে বিশ্বের কাছে অন্য রকম কদর পাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প
প্রতিকী চিত্র

এ পর্যন্ত ৪০টি দেশে গেছে করোনা চিকিৎসায় বহুলব্যবহৃত পাঁচটি ওষুধ। এর সঙ্গে অন্যান্য ওষুধও করোনাকালে ছুটেছে দেশে দেশে। সব মিলিয়ে ছয় মাসে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ রপ্তানি করা হয়েছে। এখনো চাহিদা আসছে বিভিন্ন দেশ থেকে। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার ওষুধ—রেমডেসিভির, ফেভিপিরাভির, আইভারমেকটিন, এজিথ্রোমাইসিন ও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। অবশ্য প্রথম দুই মাস হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের বিপুল চাহিদা থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব মো. শফিউজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অনেক ধনী, অনেক বড় ও অনেক প্রভাবশালী দেশও বাংলাদেশ থেকে ওষুধ নিচ্ছে। আমেরিকার মতো দেশেও বাংলাদেশের ওষুধ গেছে। ফলে এটাকে আমাদের বড় সাফল্য হিসেবেই দেখা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক ওষুধ কোম্পানির সক্ষমতা শতভাগ বিশ্বমানের। ইউরোপ-আমেরিকার বড় বড় ওষুধ কোম্পানির যে সক্ষমতা ও যে মান রয়েছে আমাদের কয়েকটি কোম্পানির তা আছে বলেই আমরা সেই মানের যেকোনো ওষুধ দ্রুতগতিতে তৈরি করতে পারছি। এবার করোনায় যে ওষুধ নিয়ে যখন আলোড়ন উঠেছে, তখনই সবার আগে আমরা সেসবের কোনো কোনো ওষুধ বিপুল পরিমাণে তৈরি করেছি। এ ছাড়া আমেরিকা বা ইউরোপে এক ডোজ রেমডেসিভিরের চেয়ে আমাদের দেশে উৎপাদিত রেমডেসিভিরের দাম বহুভাগ কম। এই কারণেই অন্যান্য দেশ বাংলাদেশ থেকে ওষুধ নেওয়ার জন্য লাইন দিয়েছে।’

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, আগে থেকেই বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই নিয়মিত রপ্তানি হতো। আমেরিকা-ইউরোপের বহু দেশে বাংলাদেশের ওষুধের চাহিদা খুবই বেশি। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর যে যখনই যে ওষুধের বেশি কার্যকর হওয়ার তথ্য প্রকাশ পায়, আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তখনই সেই ওষুধের চাহিদা আসে বাংলাদেশে। এই প্রক্রিয়ায় দেশের কমপক্ষে আটটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত কয়েকটি ওষুধের রপ্তানি বেড়ে যায়। এর মধ্যে রেমডেসিভির, এজিথ্রোমাইসিন, ফেভিপিরাভির, আইভারমেকটিন, ডেক্সামেথাসন ও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে। করোনা জয়ে এখন পর্যন্ত ৪০টি দেশে গেছে বাংলাদেশের ওষুধ। এর মধ্যে রয়েছে পাশের দেশ ভারত থেকে শুরু করে নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ইরাক, মিসর, লিবিয়া, আরব আমিরাত, সৌদি আরব, তুরস্ক, চিলি, ব্রাজিল, মেক্সিকো, তিউনিশিয়া, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ঘানা, মৌরিতানিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, পূর্ব তিমুর, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, ইউক্রেন, মলদোভা, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, সোমালিয়া, আইভরিকোস্ট, ফিজি, ইকুয়েডর, কলোম্বিয়া, বলিভিয়া ও পেরু। আরো কয়েকটি দেশে রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সূত্র অনুসারে দেশে বেক্সিমকো, স্কয়ার, ইনসেপ্টা, রেনাটা, এসিআই, এসকেএফ, হেলথকেয়ার, পপুলার, বিকন, একমি, এরিস্টোফার্মাসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওষুধ গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ রপ্তানি হয়েছে করোনাকালে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গেছে বেক্সিমকো, ইনসেপ্টা, রেনাটা ও স্কয়ারের ওষুধ।

ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের উপমহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বিশ্বের ৬৮টি দেশে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ রপ্তানির করে আসছি। এর মধ্যে এবার করোনা শুরুর হওয়ার পর কয়েকটি ওষুধের ব্যাপক চাহিদা পেয়েছি বিভিন্ন দেশ থেকে। সে অনুসারে আমরা চার-পাঁচটি আইটেমের ওষুধ রপ্তানি করেছি সবচেয়ে বেশি।

এম এ নাবিল / বে অব বেঙ্গল নিউজ / স্টাফ রিপোর্টার

বে অব বেঙ্গল নিউজ - Bay of Bengal News

বে অব বেঙ্গল নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *