হেফাজতের হাতে ইসলাম নিরাপদ নয় || বললেন ৫১ আলেম
হেফাজতের হাতে ইসলাম কোনোভাবেই নিরাপদ নয় দাবি করে ৫১ আলেম এক বিবৃতিতে বলেছেন, দেশে ফিতনা সৃষ্টিকারী হেফাজতে ইসলামকে বর্জন করুন।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) দেশের ৫১ আলেম গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান
বিবৃতিতে তারা বলেন, সবাইকে জানাই পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। মহান আল্লাহর দরবারে লাখো শুকরিয়া আমাদেরকে আরও একটি পবিত্র মাস ইবাদত বন্দেগিতে কাটানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। আসুন আমরা এ পবিত্র মাসে মহামারি করোনা থেকে বিশ্ববাসীকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে আরও বেশি করে ফরিয়াদ জানাই।
বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে তারা বলেন, আপনারা জানেন, গতকাল দেশের বেশকিছু পত্রিকায় আলেমসমাজের নামে স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে বিবৃতিটি হলো হেফাজতে ইসলামের বর্তমানে নেতৃত্বের একটি বিবৃতি। বিবৃতিটি মিথ্যা ও বানোয়াট নানা ধরনের অভিযোগযুক্ত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিবৃতিটির মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তাদের (হেফাজতে ইসলাম) বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বের বিভিন্ন অপকর্ম এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যেভাবে দেশের জনগণ ও আলেম-ওলামারা ফুসে উঠেছে তা আড়াল করা।
আরও পড়ুনঃ
(ভিডিও সহ) ধর্ষণের জন্য সংগঠন নাকি ব্যক্তি দায়ী – সাধারণ মানুষের মতামত
নোয়াখালীতে একজনকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে পদত্যাগঃ ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার
পাক-ভারত সীমান্তে বিএসেফের গুলিতে নিহত ৫, ৯ কেজি মাদকসহ ভারী অস্ত্র উদ্ধার
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইন, শাইখুল হাদিস মাও. শাহাদাত হোসেন, কাজী মাওলানা শাহ ওমর ফারুক, ডা. প্রফেসর আল এমরান, মাওলানা মুফতি সাহাবুদ্দিন ভুইয়া, মাওলানা মো. মুহিবুল্লাহ, মাওলানা মো. গোলাম মোস্তফা, মাওলানা মো. আব্দুল আজিজ, মাওলানা মো. মোস্তফা চৌধুরী, মাওলানা মো. ইলিয়াস হোসাইন, মাওলানা মো. এখলাছুর রহমান, মাওলানা মো. মাহফুজুর রহমান, মাওলানা মো. নুরে আলম সরকার, মাওলানা মো. শামসুল হক, মাওলানা মো. আবুল খায়ের মজুমদার, মাওলানা মো. নুরুল আমিন পীর সাহেব ভাঙা, শাইখুল হাদিস মাওলানা মো. শাহাদাত হোসেন, মাওলানা শাহ মো. ওমর ফারুক, মাওলানা মো. জসিম উদ্দীন, মাওলানা মো. এনামুল হক সিদ্দিকী, মাওলানা মো. মনির হোসাইন চৌধুরী, ড. মাে. আবু বকর ছিদ্দিক, মাওলানা মো. হারুন, মাওলানা মো. মোছাদ্দেক, মাওলানা মো. ওসমান গনী, মাওলানা মো. নুরুল ইসলাম, মাওলানা মো. রেজাউল করিম, কাজী মাওলানা মো. তাজুল ইসলাম, মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ ফারুখ আব্দুল্লাহ, মাওলানা মো. মুনজুরুল ইসলাম, মাওলানা মো. জহিরুল ইসলাম, মাওলানা মো. দৌলতখান, মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মো. আজমীর হোসাইন, আলহাজ্ব মো. হারুনুর রশিদ, মাওলানা মো. ফয়জুল্লাহ, এড. মনির হোসেন, মোসা. আফসানা পারভিন মনা, মোসা. জয়নব আরা ফেরদৌসী, মোসা. রোকেয়া বেগম, মোসা. ইসরাত জাহান লামিয়া, মাওলানা মো. আব্দুল কাইউম, শাহ মাওলানা মো. আনোয়ারুল হক, মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেন ফরিদপুরী, মাওলানা মো. মিজানুর রহমান, মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, মাওলানা মো. ইকবাল, মাওলানা মো. গোলাম মোস্তফা, মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম ও মাওলানা মো. মিজানুর রহমান।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন,”আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) তার জীবদ্দশায় ইসলাম ধর্ম, ইসলামের মর্মবাণী প্রচার করতে গিয়ে অন্য ধর্মের মানুষদের প্রতি অপমান-আঘাত, বাধার শিকার হয়েও কোনদিন তাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেননি। বরং সবসময় তাদের প্রতি সহমর্মিতা,বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।”
কিন্তু আজকে দেশে হেফাজতে ইসলাম ধর্ম রক্ষার নামে যেভাবে অন্য ধর্মের মানুষের উপসনালয়ে, তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে তা আমাদের রাসুলের দেখিয়ে যাওয়া পথের পরিপন্থী। সুতরাং এরা কখনোই প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না। হেফাজতে ইসলাম হচ্ছে দেশে ফিতনা সৃষ্টিকারী ফাসেকের দল। এদের হাতে আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলাম নিরাপদ নয়।
হেফাজতে ইসলামকে বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আপনারা জানেন হেফাজতে ইসলামের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা যিনি বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার পর্দা সবসময় নীতি-নৈতিকতার বক্তব্য নিয়ে গরম করে রাখতেন তিনি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ব্যতীত অন্য একজন নারীকে নিয়ে রিসোর্টে সময় কাটাতে গেলে স্থানীয় জনরোষের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে দেখা যায় তিনি তার প্রকৃত স্ত্রীর নাম দিয়ে বুকিং করে এ নারীর সাথে সেখানে যান। তিনি উত্তেজিত জনগণের কাছে এ নারীকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া তার প্রকৃত স্ত্রীর সাথে ফোনালাপে এ নারীকে অন্য ব্যক্তির স্ত্রী দাবি করেন। হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব এ ধরনের ভণ্ড, নারীলোভী, দুঃশ্চরিত্র ব্যক্তির পক্ষ অবলম্বন করে বিবৃতি দেন যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয়।
সুতরাং, হেফাজতের এ নেতৃত্ব কিংবা যারা এ ভণ্ড নেতৃত্ব অনুসরণ করছে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তারা শুধুমাত্র ইসলামের শত্রু নয় তারা দেশ ও দশের শত্রু।