প্রদীপ দিনের বেলায় আমার ভাইয়ের লাশটিও দাফন করতে দেন নি…
সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ১ নাম্বার আসামি করে আরও দু’টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর ) দুপুর আড়াইটার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে মামলা দু’টি দায়ের করা হয়েছে। মামলা দু’টি টেকনাফ উপজেলার ডেল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিহত সালেহ আহাম্মদের স্ত্রী হালিমা খাতুন এবং নিহত নূর মোহাম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগম বাদী হয়ে করেছেন ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, উক্ত মামলা দু’টির উল্লেখিত ঘটনায় পূর্বে কোন মামলা দায়ের হয়েছে কিনা এবং ময়নাতদন্তের কোন রিপোর্ট রয়েছে কিনা এসব যাচাই করে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজিবী বলেন, আদালতে ওসি প্রদীপ সহ ১৬ জনকে আসামি করে বেআইনি হত্যাকাণ্ডের জন্য হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজিবী আরো জানান, “১৮/১০/২০১৯ সালে সোনা মিয়ার দোকান থেকে উনাকে (বাদীর স্বামী) তুলে নিয়ে গিয়ে বাদী থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল ওসি প্রদীপ। ৫০ হাজার টাকা ওসি প্রদীপের একজন সোর্সকে দেওয়া হয় কিন্তু বাকি টাকা জোগাড় করতে না পারায় পরদিন (১৯/১০/২০১৯) রাত আনুমানিক ১১ঃ৪৫ ঘটিকার সময়ে মহেশখালী নৌকা ঘাঁটে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়।”
এদিকে মামলার বাদীদের দাবি ওসি প্রদীপ সহ সংশ্লিষ্ট আসামিরা নিহতদের ধরে নিয়ে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা দেওয়ার পরেও তাদেরকে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি স্বজনদের।
নিহতের মা বলেন, শাপলাচত্ত্বরের এক দোকান থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তার ছেলেকে। পরে দুদিন রেখে তাকে হত্যা করা হয় কথিত বন্দুকযুদ্ধ নামে।
অন্যদিকে নিহতের ভাই জানান, তারা আমার ভাইকে ৪০ লক্ষ টাকার জন্যে হত্যা করেছে। খুন করার পরেও দিনের বেলায় লাশ দাফন করতে দেন নি প্রদীপ। আমরা আদালতে বিচার দিয়েছি আদালত যা সিদ্ধান্ত দিবেন আমরা তা ই মেনে নিব। কিন্তু আমরা আদালত ন্যায় বিচার করবেন বলে আশাবাদী।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে ‘গাড়ি তল্লাশিকে’ কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। পরে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রদীপ সহ বাকিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন সিনহা রাশেদের বোন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, এপিবিএনের তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
উল্লেখিত ঘটনার পর থেকেই বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ সহ কিছু পুলিশ সদস্যের নামে অন্তত ১০টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে আদালতে।
ওয়াইএইচ / বে অব বেঙ্গল নিউজ / স্টাফ রিপোর্টার