শুভ জন্মদিন ক্যাপ্টেন সিলভা
সালটা ১৯৮৪, দিনটা ২২ই সেপ্টেম্বর!
রিও ডি জেনেরিওর এক গরিব পরিবারে জন্ম ছেলেটার। মা-বাবা ভালোবেসে ছেলেটার নাম রাখলেন থিয়াগো এমিলানো দা সিলভা যাকে আমরা ভালোবেসে থিয়াগো সিলভা বলেই ডাকি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্কুলের টিমে খেলে ফ্লুমিনেসের কোচ মরিনহোর নজরে আসেন। কিন্তু মরিনহো তাকে প্রথমে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলাতেন।
এক বছর পর ব্রাজিলের তিনটা ক্লাবে ট্রায়াল দিলেও বাদ পড়েন। ২০০২ সালে সাও পাওলোর একটা টুর্নামেন্টে খেলার সময় ইতালির রোমার তৎকালীন কোচ ব্রুনো কন্টির নজরে আসেন, কন্টি তাকে রোমার জন্য চাইলেও তিনি রোমাতে যেতে চাননি। ২০০৪ সালে সে পজিশন চেইঞ্জ করে ডিফেন্ডার হিসেবে খেলা শুরু করে। সে সময় পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তো তাকে ২.৫ মিলিয়ন ইউরোতে কিনে নেই।
কিন্তু তার জায়গা হয় রিজার্ভ বেঞ্চে। তাই ১ বছর পর রাশিয়ার ডাইনামো মস্কো তে জয়েন দেই। ডাইনামো মস্কোতে খেলার সময় তার শরীরে যক্ষা ধরে পড়ে এবং ডাক্তার তাকে জানায় দুই সপ্তাহের মধ্যে হসপিটালে ভর্তি না হলে সে মারাও যেতে পারে। যক্ষা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার পর সে খেলা থেকে অবসর নিতে চেয়েছিল কিন্ত তার মা তাকে আবার মাঠে ফিরে আসতে বাধ্য করে।
২০০৬ এর দিকে ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেস তাকে দলে নেই, যেই ফ্লুমিনেস তাকে ট্রায়াল থেকেই বাদ দিয়েছিল! ঐ বছর ফ্লুমিনেস ১৫ তম হয়ে লিগ শেষ করলেও লিগের সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে পুরস্কার পায় সে। এর পরের বছর তার খেলায় মুগ্ধ হয়ে দুঙ্গা তাকে কোপা আমেরিকার দলে ডাক দেন। কিন্তু তার জায়গা হয় রিজার্ভ বেঞ্চে।
২০০৮ সালে ইন্টার মিলান, চেলসি ও ভিয়ারিয়াল সাথে যোগাযোগ থাকলেও এসি মিলানকে কথা দেওয়ায় সে মিলানে যোগ দেই। সে সময় ১০ মিলিয়ন ইউরোতে এবং বার্ষিক ২.৫ মিলিয়ন ইউরো বেতনে এসি মিলানে যোগ দেই। প্রথম প্রথম ফাস্ট টিমের সাথে ট্রেনিং এর সুযোগ পেলেও তেমন একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতেন না। কিন্তু ইতালির বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার পাওলো মালদিনি আর কোচ কার্লো আনচেলেত্তির সানিধ্য ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাননি।
২০০৯-২০১০ সিজনে এসি মিলানের ফাস্ট টিমে সুযোগ পান, তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। পাওলো মালদিনির চোখে ফিজিক্যালি এবং ট্যাকনিকালি সেরা ডিফেন্ডার দের মধ্যে একজন ছিল সিলভা।
২০১২ তে তৎকালীন রেকর্ড ট্রান্সফার ৪২ মিলিয়ন ইউরোতে পিএসজিতে যোগ দেন। গত ৮ বছর পিএসজির হয়ে খেলার সুবাদে ৭ টা লিগ শিরোপা, ৫ টা কোপা দে ফ্রান্স, ৬ টা কোপা দে লা লিগ এবং ২০১৯-২০২০ সিজনে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ রানার্সআপ হয়।
২০২০ সিজনে ফ্রি ট্রান্সফারে চেলসিতে যোগ দেই। সিলভার ক্যারিয়ার ক্লাবের পাশাপাশি ব্রাজিল ন্যাশনাল টিমেও উজ্জ্বল। ২০১৪ তে ওয়াল্ড কাপ সেমিফাইনালে জার্মানীর বিপক্ষে ৭ গোল খাওয়ার পেছনে তার দলে না থাকাটাই বড় বিপর্যয় বলে মনে করেন ফুটবল বোদ্ধারা।
২০২২ সালে তার বয়স হবে ৩৮ বছর, হয়ত সে সময় তার শরীরে ১৯ বছরের যুবকের মত শক্তি থাকবে না কিন্তু অভিজ্ঞতা আর পরিশ্রম যদি ধরে রাখতে পারেন তাহলে নিশ্চিত ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ টিটের ব্রাজিল টিমের বিমান তাকে হয়ত দেখতে পাব।
শুভ জন্মদিন ক্যাপ্টেন
স্টাফ রিপোর্টার/বে অব বেঙ্গল নিউজ