রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোকে সেবা চালুর অনুমতি দিল বিআরটিএ…
বিগত ১ জুন থেকে বিআরটিএ স্বাস্থ্য বিধি মানার শর্তে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু করলেও বন্ধ ছিল রাইড শেয়ারিং সেবার কার্যক্রম।তবে,সেবাটি পুনরায় চালু করার অনুমতি দিল বিআরটিএ।
গত, বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিআরটিএ-এর উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) বিমলেন্দু চাকমা স্বাক্ষরিত এক আদেশে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোকে সেবা চালুর অনুমতি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ১ সেপ্টেম্বর থেকে যত সিট তত যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে গণপরিবহনগুলোকে।
সেই হিসেবে মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট প্রাপ্ত মোটরসাইকেলগুলো রাইড শেয়ারিং সেবা দিতে পারবে। তবে শুধু ডিটিসিএ এলাকায় অর্থাৎ ঢাকা ও গাজীপুর মহানগর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরে এই সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।
এই আদেশ অনুসারে, আগে থেকেই রাইড শেয়ারিং সেবার আওতায় থাকা সিলেট এবং চট্টগ্রামে এখনও সেবাটি বন্ধই থেকে গেলো।
আদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিস্তারিত নির্দেশনাও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, চালক ও যাত্রীকে মাস্ক, ফেস শিল্ড, হ্যান্ড গ্লাভস, নির্দিষ্ট মানদণ্ডের হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। ট্রিপের শুরু ও শেষে হেলমেট, মোটরসাইকেলসহ যাত্রীর মালামাল স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের জন্য বিআরটিএর অন্য যেসব নির্দেশনা রয়েছে, মেনে চলতে হবে সেগুলোও।
আদেশে এনলিস্টমেন্ট সনদ পাওয়া এক হাজার ১৫৬টি বাইকের তালিকাও প্রকাশ করে বিআরটিএ। এগুলোর মধ্যে আকাশ টেকনোলজিস লিমিটেড ৯৩টি, আকিজ অনলাইন লিমিটেড ১০৮টি, চালডাল লিমিটেড ৯৭টি, সিএনএস লিমিটেড ৪৪টি, ইজিয়ার টেকনোলজিস লিমিটেড ৩টি, ওভাই সলিউশনস লিমিটেড ৯৪টি, পাঠাও লিমিটেড ১২৫টি, পিকমি লিমিটেড ৬৯টি, সেজেস্টা লিমিটেড ৯৫টি, সহজ লিমিটেড ৯২টি এবং উবার বাংলাদেশ লিমিটেড ৩৬৬টি বাইকের এনলিস্টমেন্ট নিবন্ধন পায়।
রাইড শেয়ারিং চালু করার অনুমতির সিদ্ধান্ত সাধুবাদ জানিয়েছে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলো। দেশি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুসেইন এম ইলিয়াস বলেন, কোভিড সঙ্কটের শুরু থেকেই আমাদের সমাজের সবার নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে একত্রিত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টাগুলো অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কিন্তু এখনো আমাদের নিজেদের সুরক্ষা ও সমাজের সুরক্ষার জন্য আমাদের সবারই কিছু দায়িত্ব রয়েছে। যেহেতু আমরা এই কঠিন সময়ে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে শিখছি, আপনার নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে পাঠাও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে রাইড শেয়ারিংয়ের সময় এনলিস্টমেন্ট সনদসহ মোটরবাইকে অন্য দলিলের মূল কপি সঙ্গে রাখার নির্দেশনাও দিয়েছে বিআরটিএ। রাইড শেয়ারিংয়ের সময় এসব ডকুমেন্ট পাওয়া না গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। বাংলানিউজকে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, কোনো চালক যদি এনলিস্টমেন্ট সনদ ছাড়া রাইড শেয়ার করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জাগায় জাগায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। তারা এগুলো দেখবে।
কোনো রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম এনলিস্টমেন্ট সনদ ছাড়াই চালকদের সুযোগ দিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে সরাসরি দেখার জন্য যে অটোমেশন দরকার। সেটি এখনই তৈরি করা সম্ভব নয়। তবে আমরা নিজেরা ‘স্যামপ্লিং’ এর মাধ্যমে দেখছি। আমাদের কর্মকর্তারা বিচ্ছিন্নভাবে নিজেরা রাইড শেয়ারের অনুরোধ পাঠান। যে যানবাহনটি আসছে সেটার তথ্য আমাদের এনলিস্টমেন্ট হওয়া তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখি। এমন যদি পাওয়া যায় তাহলে সেই যানবাহন চালক বা মালিক এবং রাইড শেয়ার করতে দেওয়া সেই প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসি/বিবিএন /স্টাফ রিপোর্টার।