ব্রাম্মণবাড়িয়ায় বিজিবি-হেফাজত সংঘর্ষ | নিহত ৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৭ মার্চ) বিকালে ব্রাম্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ও সদর উপজেলার নন্দনপুর গ্রামে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ-বিজিবিসহ আহত হয়েছে অর্ধশত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রানাউল ইসলাম পাঁচজন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন্দনপুর হারিয়া গ্রামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারিউড়া মৈন্দ গ্রামের জুরু আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২) , আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে দোকানী জুরু আলম (৩৫), বুধলের আলী আহমদের ছেলে প্লাম্বার শ্রমিক কাউসার (২৫), মোহাম্মদ জুবায়ের ও সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবিড় মিয়ার ছেলে শ্রমিক বাদল মিয়া (২৪) ।
এদের মধ্যে সুজন মিয়া ব্রাম্মণবাড়িয়ার বারিউড়া মৈন্দ গ্রামের স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়েন। নিহতদের স্বজনরা তাদের হেফাজত ইসলামের কর্মী বলে দাবি করছেন।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুক্রবারের সহিংসতা, মোদিবিরোধী অবস্থান, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ঢাকার বায়তুল মোকাররমের সামনে হামলার প্রতিবাদে হেফাজত শনিবার (২৭ মার্চ) বিকালে কর্মসূচি দেয়।
অপরদিকে হেফাজতের কর্মসূচির বিরুদ্ধে শনিবার বিকালে ব্রাম্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এরপরে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হয়। এসময় উভয়পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এরপর পুলিশ ও বিজিবি ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে এলে তাদের সঙ্গে হেফাজতের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোঁড়ে আইন পুলিশ-বিজিবি।
হেফাজতের এক কর্মী গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, এসময় পুলিশ-বিজিবি বাহিনীর ছোড়া গুলিতে হেফাজত কর্মীরা গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে আনার পর তাদের মধ্যে কয়েকজন মারা যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের একজন ডাক্তার জানান, গুলিবিদ্ধ ৩ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আর ২ জন মারা যান হাসপাতালেই।
এদিকে, ব্রাম্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দরপুর গ্রামেও গ্রামবাসী ও হেফাজত ইসলামের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কর্মসূচির নামে আইন পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সেখানেও আত্মরক্ষায় গুলি ছোড়ে পুলিশ। সেখানেও আহত হন কয়েকজন।
এতে হাসপাতালে নিহতদের মধ্যে কে কোথায় মারা গেছে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। নিহতদের অনেকের পরিচয়ও জানা যায়নি। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও বিজিবি যৌথভাবে কাজ করছে।
অন্যদিকে ব্রাম্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় স্থানীয় গ্রামবাসীদের বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয় বলে জানা যায়। এতে পুলিশ ক্যাম্পে থাকা ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের নাম এখনো জানা যায়নি। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এসময় পুলিশ অন্তত ৪০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ১৫ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সরাইল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে হামলা চালানো হয়।