“বাবা যে আমার কাছে কি ছিলেন, তোরা তা বুঝবি না।” | বঙ্গবন্ধু
৩০ মার্চ ১৯৭৫ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাবা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাদা শেখ লুৎফর রহমান এই দিনে মারা যান। বঙ্গবন্ধু তার বাবার মৃত্যুতে অনেক ভেঙে পরেছিলেন, কাঁদতে কাঁদতে সেদিন তিনি নিকট আত্মীয়দের বলছিলেন “বাবা যে আমার কাছে কি ছিলেন, তোরা তা বুঝবি না।”
শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের গোপালগঞ্জ দেওয়ানী আদালতের সেরেস্তাদার (নথিপত্র সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা)। তার বাবা শেখ আবদুল হামিদ ছিলেন শেখ বোরহানউদ্দিন ও শেখ কুদরোতুল্লাহর বংশধর। যারা পুর্ব বাংলার মাটিতে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছেন। শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম। তিনি তার চাচাতো বোন সায়েরা খাতুনকে বিয়ে করেন। তার চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে এ মহান ব্যক্তির অবদান ছিল অপরিসীম। বরাবরই ছেলে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি ও কর্মজীবনে উৎসাহ জুগিয়েছেন তিনি। তার অনুপ্রেরণাতেই শেখ মুজিব তার জীবনের বহু সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন। দীর্ঘ দুই যুগ সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে দেশের নেতৃত্বের শীর্ষে পৌঁছে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠাতা করতে পেরেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু নিজেও তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে তার বাবার এ অবদানের কথা স্বীকার করে গেছেন।
উল্লেখ্য, মধুমতি নদীর উপর গোপালগঞ্জ-পিরোজপুর মহাসড়কের সংযোগকারী সেতুটি শেখ লুৎফর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়। এছাড়াও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজটি তার নামেও রাখা হয়।