বান্দরবান জেলা প্রশাসন কতৃর্ক জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসকে ঘিরে ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। আজ ১৭ মার্চ ২০২২ ইংরেজি বুধবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তেলন ও ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবটির শুভ সূচনা হয়।
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। এরপর শিশু—কিশোরদের নিয়ে কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের উদ্বোধন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিতে পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জেরিন আক্তার, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ—পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুরাইয়া আক্তার সুইটি, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দীসহ শিশু—কিশোর, ছাত্র—ছাত্রী,ও সরকারী—বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা—কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা র্যালিতে অংশ নেন।
১৭ মার্চের কেন্দ্রীয় প্রোগাম বড পর্দার মাধ্যমে দেখানো শেষে বিকেল সাড়ে ৪টায় বর্ণীল সাজে সজ্জিত শিশুদের নিয়ে সম্প্রীতির মঞ্চে ফিতা কেটে, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ‘মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলা—২০২২’ এর শুভ উদ্বোধন করা হয়। পরে সুসজ্জিত ট্রাকে করে ৫০টি জাতীয় পতাকা নিযে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে রোয়াংছডি উপজেলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সুবিধাজনক সময়ে চিত্রাঙ্কন, হাতের লেখা, নৃত্য, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সংগীতানুষ্ঠান, পুস্তক ও ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বিকেল ৫টায় আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বান্দবানের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুরাইয়া আক্তার সুইটির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তীবরীজি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জেরিন আক্তার, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ—পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফর রহমান ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী। শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কারসহ সনদপত্র বিতরণ করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিআরডিবি’র ৩৬ জন ছাত্র—ছাত্রীকে স্কুল ব্যাগ, ইউনিফর্ম ও সোয়েটার প্রদান করা হয়।
সবশেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ের পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ‘মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলায় বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ৬০টি স্টল স্থাপন করে তাদের কার্যক্রম মেলায় আগত অতিথিদের প্রদর্শন করেন। পাশাপাশি আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলা, ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ও ডায়াবেটিস টেস্ট করা হয়। এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সন্ধ্যা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সরকারী—বেসরকারী বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, বাঙালী জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী প্রতিটি বাঙালীর কাছে আনন্দের ও গৌরবের। মুজিব শতবর্ষ থেকে আরম্ভ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন প্রতিটি বাঙালীকে গৌরবদীপ্ত ও আনন্দিত করে। জাতির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো শিশুদের সামনে তুলে ধরা উচিত। শিশুরা জানবে তাদের অতীত। শিশুদের জানানো উচিত আমরা এ স্বাধীন দেশ রক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি। স্বাধীনতার পর জাতির জনকের জীবিতাবস্তায় ১৩৪ টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এসময় জাতির জনকের রাজনৈতিক ও বাঙ্গালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি।