বগুড়ার নদী থেকে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেওয়ায় শেরপুরের ইউএনওর গাড়িতে হামলা ও ২জন আহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ৮…
বগুড়ায় নদী থেকে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেওয়ায় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত আলী শেখের গাড়িতে হামলা করে ভাংচুর ও ২জন আহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এপর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেফতারের পর তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আটজন হলেন- শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মো. ফরহাদ হোসেন (২৬),পিতা-মেহের আলীর। মো. আলম প্রামাণিক (৩৫), পিতা-জাফর প্রামাণিক। ইব্রাহীম হোসেন (২০)পিতা-তোজাম প্রামাণিক।
, মো. ওসমান গণি (২৮), পিতা-আজিজার রহমান। মো. শাহিন শাহ (২০),পিতা-গোলাম প্রামাণিক। মো. মেহেদী হাসান (২৫)
পিতা-গোলাম নবী ও নলডাঙ্গী গ্রামের মো. রুবেল হাসান (৩০), পিতা-শাজাহান আলী। ফরহাদ হোসেন (২৭),পিতা আশরাফ আলী।
গত শনিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের বড়ইতলী নলডাঙ্গী এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের অফিস সহকারী উজ্জল মোহন্ত ও নৈশ্যপ্রহরী মনজুরুল হক আহত হন। পরে রাতেই নৈশপ্রহরী মনজুরুল হক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮০-৮৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৩ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ইউএনও লিয়াকত তার দফতর ও ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে শেরপুর উপজেলার শেরুয়া বটতলাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
এইদিকে, একপর্যায়ে উপজেলার নলডাঙ্গী এলাকায় বাঙালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পান। পরবর্তীতে সেখানে ইউএনওর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে নলডাঙ্গী গ্রামে বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম দেখতে পান। এরমধ্যে ৫০০ মিটার প্লাষ্টিকের পাইপ ও ড্রেজিং মেশিন লাগানো ছিল। পরে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ইউএনও লিয়াকত ওই সরঞ্জাম খুলে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন।
কিন্তু কতিপয় স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা এতে অস্বীকৃতি জানান। পাশাপাশি ইউএনওর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এছাড়া ওই এলাকার আনুমানিক প্রায় ১০০ জন ব্যক্তিদের ভাড়াটে হিসেবে ডেকে আনা হয়।
পরবর্তীতে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠি, গাছের ডাল ও ইট-পাটকেল নিয়ে ইউএনওর চলা অভিযানে থাকা সদস্যদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তাদের বহনকারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সরকারি গাড়ি (বগুড়া-ঠ-১১-০০৪৫) ভাঙচুর করা হয়। এতে এক লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। এ সময় ভূমি অফিসের চেইনম্যান শ্রী উজ্জল কুমার পাল ও নৈশ্যপ্রহরী মনজুরুল হককে মারপিট করে আহত করা হয়।
একপর্যায়ে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ইউএনওসহ সবাইকে উদ্ধার করে। আর পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা সটকে পড়েন। তবে যাওয়ার সময় তারা বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়ার পাশাপাশি সড়কে গাছের গুঁড়ি, বাঁশের লাঠি ও ইটপাটকেল ফেলে যাতায়াতের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এইদিকে, শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) এস এম আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, হামলা-মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮০-৮৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটক আটজনকে দুপুরের দিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।এছাড়া, মামলায় অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
এসি/বিবিএন /স্টাফ রিপোর্টার।