দিল্লির কাছে ৪৪ রানে হারতে হল চেন্নাইকে
শুক্রবার টস জিতে দিল্লিকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান ধোনি। চেন্নাই বোলারদের বিরুদ্ধে শুরুটা বেশ ভাল করেন পৃথ্বী শ। শুরু থেকেই ক্রিকেটীয় শট খেলে রানের গতি বাড়ানোর কাজ করেন। পৃথ্বী যখন নিজেকে মেলে ধরছেন তখন শিখর ধওয়ন নিজেকে সংযত রাখেন।
রবীন্দ্র জাদেজার বিরুদ্ধে অভিজ্ঞ ধওয়ন গিয়ার পরির্তন করেন। পৃথ্বী ও শিখর শুরুটা ভাল করায় ১০ ওভারে দিল্লির রান একসময়ে ছিল বিনা উইকেটে ৮৮ । পীযূষ চাওলা পৃথ্বী শ (৬৪) ও শিখর ধওয়নকে (৩৫) ফিরিয়ে রানের গতি খানিক কমান।
যদিও আরও আগেই ফিরতে পারতেন পৃথ্বী শ। দীপক চহারের বল দিল্লি ওপেনারের ব্যাটে খোঁচা লেগে ধোনির হাতে যায়। কিন্তু ধোনি ও চহার কেউই আউটের আবেদন করেননি। যদিও স্নিকোমিটারে ব্যাটে বল ছোঁয়ার শব্দ পাওয়া গিয়েছে। দিল্লির ইনিংসের শেষে এ নিয়ে পৃথ্বীকে প্রশ্নও করা হয়। দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পরে ঋষভ পন্থ ও শ্রেয়াস আইয়ার তৃতীয় উইকেটে ৫৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন।
স্যাম কারেন দিল্লি অধিনায়ককে ২৬ রানে ফেরান। উইকেটের পিছনে শরীর ছুড়ে আইয়ারের ক্যাচ ধরেন ধোনি। চেন্নাই অধিনায়কের বয়স চল্লিশের কোটায়। দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন।উইকেটের পিছনে দারুণ ক্যাচ ধরলেন। পীযূষ চাওলার বলে চকিতে স্টাম্প করেন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠান পৃথ্বী শকে।
একসময়ে দিল্লি যেভাবে এগোচ্ছিল, তাতে ১৭৫-এর বেশি করতেই পারত তারা। সেই জায়গায় দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে আসে চেন্নাই। পন্থ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান ৩৭ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতগতিতে রান করতে পারেননি চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার-মুরলী বিজয় ও শেন ওয়াটশন। খারাপ সময় চলছে মুরলী বিজয়ের।মাত্র ১০ রান করলেন। ১৪ রানে অক্ষর পটেলের বলে আউট হন ওয়াটসন। এর আগে পাঁচ বার অক্ষর পটেলের বলে আউট হয়েছেন অজি ক্রিকেটার। এ বার নিয়ে ষষ্ঠ বার পটেলের শিকার হলেন ওয়াটসন। প্রতিশ্রুতিমান রুতুরাজ (৫) রান আউট হন ।
ধোনির দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একমাত্র ধারাবাহিক দু প্লেসি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন ৫৮ রানের ইনিংস। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৭২-এর পরে করলেন ৪৩ রান। তাঁর ক্যাচ দু’ বার ফেলেন হেটমায়ার। কথায় বলে ক্যাচ ধরো, ম্যাচ জেতো। দু’ বার জীবন ফিরে পাওয়ার পরেও দু’ প্লেসি সেই সুযোগ নিতে পারলেন না। রাবাদার বলে ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা। কেদার যাদব ২৬ রানে আউট হওয়ার পরে দেওয়াললিখন হয়তো পড়ে ফেলেছিলেন চেন্নাই সমর্থকরা। আশায় ছিলেন ধোনি-ধামাকার। কিন্তু অধিনায়কের ব্যাট বোবা থেকে গেল।
আগের ম্যাচেই রাজস্থান রয়্যালসের কাছে হারতে হয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। সেই ম্যাচে সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামায় সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শুক্রবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ছ’ নম্বরে নামলেন ধোনি। তখন ম্যাচ জেতার জন্য চেন্নাইয়ের আস্কিং রেট অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।
জেতার জন্য ২৬ বলে করতে হত ৭৮ রান। বাউন্সার দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান নরতিয়ে। চেন্নাইয়ের তিনটি ম্যাচেই দেখা গেল প্রথম বলে মাহির জন্য অপেক্ষা করছে বাউন্সার। তাঁর মতো বর্ষীয়ান ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে এটাই বিপক্ষের রণনীতি। নরতিয়ের দ্বিতীয় বলে তিন রান নেন ধোনি। আবেশ খানের পরের ওভারে দুটো বাউন্ডারি মারেন তিনি।
শেষ ওভারে রাবাদার বলে আউট হলেন তিনি। তার আগে রানের গতিও বাড়াতে পারলেন না। এদিনও ফিনিশার ধোনিকে দেখা গেল না। ১২ বলে ১৫ রান করে আউট হলেন চেন্নাই অধিনায়ক। দিল্লির কাছে ৪৪ রানে হারতে হল চেন্নাইকে। কিছুই যেন ঠিকঠাক হচ্ছে না ধোনির দলের।
এখনও পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ খেলেছে ধোনির দল। তার মধ্যে একটিতে জিতেছে। আর হার মেনেছে দুটোতেই। অন্যদিকে দিল্লি দুটো ম্যাচই জিতল। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে সুপার ওভারে হারিয়েছিল শ্রেয়াস আইয়ারের দল।রীতিমতো প্রাধান্য রেখে তারা হারাল চেন্নাইকে।
স্টাফ রিপোর্টার/বে অব বেঙ্গল নিউজ