ত্রিনবাগোর চতুর্থ শিরোপা জয়
করোনার কারণে বাসায় টিভি সেটের সামনে শাহরুখকে দেখতে হয়েছে ফাইনাল ম্যাচ। নাহয় হয়তো সশরীরে উপস্থিত হয়ে যেতেন ক্যারিবিয়ানে। তবে মালিককে কাছে না পাওয়ার আক্ষেপ ত্রিনবাগো তারকারা ঘুচিয়েছেন প্রতাপশালী এক জয়ে।
সেইন্ট লুসিয়া জুকস পাত্তাই পায়নি বলতে গেলে। টুর্নামেন্টের অষ্টম আসরের ফাইনালে ৮ উইকেটে জেতার ফলে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সফলতম দল এখন কাইরন পোলার্ডের দল। ত্রিনবাগোর এটি চতুর্থ শিরোপা।
ম্যাচ শেষে বলিউড তারকা শাহরুখ খান নিজের ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে তিনটি সেলফি পোস্ট করলেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক এই তারকা সিপিএলের ত্রিনবাগো ফ্র্যাঞ্চাইজিরও অন্যতম মালিক। সেই দল অপরাজিত থেকে জিতে নিয়েছে সিপিএলের শিরোপা। শাহরুখ তো খুশি হবেনই! টিভিতে উচ্ছ্বসিত ডোয়াইন ব্রাভো, কাইরন পোলার্ডদের সঙ্গে পরিতৃপ্ত শাহরুখ তাই ঝটপট তুলে নিলেন সেলফি।
ক্যাপশনে লিখলেন, ‘আমি টিকেআর, আমরা রাজত্ব করি। দুর্দান্ত খেলা দেখিয়েছ ছেলেরা। আমাদের গর্বিত করেছ, খুশি করেছ এবং দর্শকহীন পরিস্থিতিতেও পার্টি করার উপলক্ষ এনে দিয়েছ। দলকে ভালোবাসি। লেন্ডল সিমন্স, ড্যারেন ব্রাভো, কাইরন পোলার্ড ও আমার পছন্দের ডোয়াইন ব্রাভো, দুর্দান্ত খেলেছ তোমরা। আইপিএলে এসো ব্রেন্ডান ম্যাককালাম, তোমাকে ভালোবাসি। ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স ও সিপিএল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ, সুন্দর টুর্নামেন্টের জন্য।’
ভালো শুরু পাওয়া সেন্ট লুসিয়া জুকসের সংগ্রহ খুব একটা বড় হতে দেননি কাইরন পোলার্ড। দারুণ ব্যাটিংয়ে বাকি কাজটুকু সারেন লেন্ডল সিমন্স ও ডোয়াইন ব্রাভো। অবিচ্ছিন্ন শতরানের জুটিতে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সকে এনে দিলেন সিপিএল শিরোপা।
ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রাকিম কর্নওয়ালকে হারায় সেন্ট লুসিয়া। আরেক ওপেনার মার্ক দিয়ালের সঙ্গে আন্দ্রে ফ্লেচারের জুটিতে আস্তে আস্তে ইনিংস মেরামত করতে থাকে লুসিয়া। তাদের ব্যাটে বড় সংগ্রহের আশা জেগেছিল সেন্ট লুসিয়া সমর্থকদের মনে।
আঘাত হানেন অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার ফাওয়াদ আহমেদ। ২৭ বলে ২৯ রান করা ডিয়ালকে ফিরিয়ে ৬৭ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। এরপরেই শুরু হয় পোলার্ড-শো। দুই ছক্কা ও চারটি চারে ২৭ বলে ৩৯ রান করা ফ্লেচারকে বিদায় করে দেন পোলার্ড। সেইন্ট লুসিয়ার মিডল অর্ডার বলতে গেলে একাই ভেঙে দেন। ৩০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তাদের ১৫৪ রানে গুটিয়ে দেন এই উইন্ডিজ তারকা।
রোস্টন চেজ ও আফগান তারকা নজিবউল্লাহ জাদরান রান তুলতে শুরু করলে তাদেরও থামিয়ে দেন পোলার্ড। ১৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় সেইন্ট লুসিয়া। ৫ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে বসে তাঁরা।
রান তাড়ায় দ্রুত ২ উইকেট হারানো দলকে ১৩৮ রানের জুটিতে পথ দেখান লেন্ডল সিমন্স ও ডোয়াইন ব্রাভো। তাদের দুই ফিফটিতে ১১ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ত্রিনবাগো।
প্রথমে একটু সাবধানী খেললেও পরে আস্তে আস্তে হাত খুলে খেলা শুরু করেন দুজন। ৩১ বলে ফিফটি তুলে নেন সিমন্স। ফিফটি করেন ব্রাভোও। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ফিফটি আসে ৪৫ বলে। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় সিমন্সের ৪৯ বলে খেলা ৮৪ রানের ইনিংসটি গড়া আট চার ও চার ছক্কায়। বাউন্ডারিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়া ব্রাভো ৪৭ বলে ছয় ছক্কা ও দুই চারে করেন ৫৮ রান।
ত্রিনবাগোর দেখাদেখি কলকাতাও শিরোপা ফিরিয়ে আনবে, শাহরুখের মনে এমন আশা আসতেই পারে!
স্টাফ রিপোর্টার/বে অব বেঙ্গল নিউজ