বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী আজ।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারী বগুড়া জেলার বাগবাড়ি গ্রামে জিয়াউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি কমল নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মাতার নাম জাহনারা খাতুন।
১৯৫২ সালে জিয়া করাচি একাডেমিক স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি করাচি স্থ ডি জে কলেজে ভর্তি হন। একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট রূপে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। করাচিতে দুই বছর কর্মরত থাকার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে স্থানান্তরিত হয়ে আসেন।
১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত জিয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদে উন্নীত হন।
পরবর্তীতে এডভান্সড মিলিটারি এন্ড কমান্ড ট্রেনিং কোর্সে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানি যান। ১৯৭০ সালে একজন মেজর জিয়া দেশে ফিরে আসেন এবং চট্টগ্রামে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন।
১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ জিয়া চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জিয়া ১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে ১ম, ৩য় ও ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এই তিনটি ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনীর প্রথম নিয়মিত সশস্ত্র ব্রিগেড জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময় জিয়া ১, ১১ নং সেক্টর ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য জিয়াউর রহমান বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত হন।
স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর ৪৪তম ব্রিগেডের কমান্ডার নিয়োগ করা হয়। ১৯৭২ এর জুন মাসে তিনি কর্নেল পদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ (উপ সেনাপ্রধান) হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন। একই বছরের অক্টোবর মাসে জিয়া মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এক সেনা অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান গৃহবন্দী হন। পরবর্তীতে ৭ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থানে তিনি মুক্ত হন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বিনা ভোটে তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ৩রা জুন এক বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমান রাষ্টপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে এক সেনা অভ্যুত্থানে জিয়া মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ১৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়া বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন সমূহ নানা সভা সমাবেশের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন।