জনি হত্যার রায়ঃ তিন পুলিশের যাবজ্জীবন…
গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনির পুলিশ হেফাজতে পিটিয়ে হত্যার দায়ে করা মামলায় পল্লবী থানার তিন পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর দুই আসামি পুলিশের ‘দুই সোর্সকে’ ৭ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এই রায় ঘোষণা করেন। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর আইনটি ২০১৩ সালে পাস হলেও এই প্রথম নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে করা কোনো মামলার রায় হলো।
ইশতিয়াক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন-পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল ইসলাম ও এএসআই কামরুজ্জামান এবং অন্য দুই আসামি হলেন পুলিশের কথিত সোর্স সুমন ও রাসেল। তাদের সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে রায়ে।
রায়ে বলা হয়েছে, পল্লবী থানার এসআই জাহিদুর রহমান খান, এএসআই রাশেদুল ইসলাম, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টুকে যাবজ্জীবন সাজা খাটার পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিতে হবে, যা দিতে না পারলে আরও ছয় মাস কারাভোগ বকরতে হবে তাদের।
এ ব্যাপারে বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস বলেন, ২০১৩ সালের নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে কোনো মামলায় দেশে এটাই প্রথম রায়। আর তিন পুলিশ সদস্যকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এ আইনে সেটাই সর্বোচ্চ সাজা।
উলেক্ষ্য, অর্থদণ্ড ছাড়াও আসামিদের প্রত্যেককে নিহতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের এই টাকা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবারকে দিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে কোনো আপিল করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, ০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর মিরপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে দুই ভাই ইশতিয়াক হোসেন জনি এবং ইমতিয়াজ হোসেন রকিকে আটক করে পুলিশ। বড় ভাই জনির মৃত্যু হয় পুলিশ হেফাজতে।
এ বিষয়ে ইমতিয়াজ হোসেন রকির অভিযোগ, ওই রাতে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছিল তার ভাইয়ের। পরে এ ঘটনায় মামলা করেন তিনি। ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালে বিচার শুরু হয়। বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) ২০২০ সালে মামলার রায়ে তিন পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন সহ বাকী দু’আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত।
ওয়াইএইচ / বিবিএন।