ক্যাম্পে জন্ম নিয়েছে ৭৬ হাজার রোহিঙ্গা শিশুঃ পুরো বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বেশি
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির ও মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শিবিরের জনসংখ্যা বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক শিশু বিষয়ক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে আবদ্ধ অবস্থায় গত কয়েক বছর ধরে জন্ম নিয়েছে আনুমানিক ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭টি শিশু।
গত তিন বছরে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নিয়েছে প্রায় ৭৬ হাজার শিশু। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) প্রতিবেদন থেকে উঠে আসে এ তথ্য। রাখাইন থেকে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার তিন বছরপূর্তি উপলক্ষে একই তথ্য প্রকাশ করে সেভ দ্য চিলড্রেন।
এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইনে ২০১২ সালে স্থাপিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শিবিরে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত গত সাত বছরে জন্ম নিয়েছে আনুমানিক ৩২ হাজার ৬৬টি শিশু। ২১টি শিবিরজুড়ে সাত বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা এটি। পুরো বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বেশি এ সংখ্যা।
সংস্থা দুটি বলছে, গত ৩১শে মে পর্যন্ত কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোয় তিন বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৭৫ হাজার ৯৭১টি। যার ফলে ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে আসার পর এই শিশুগুলোর জন্ম হয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে দুর্বিষহ যাত্রার সময় জন্ম হয় রুনার। সে অপুষ্টিতে ভুগছে। তার মা হামিদা বলেন, আমি আমার সন্তানের শিক্ষা, ভবিষ্যৎ ও আচরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। অর্থ না থাকায়, আমি তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারছি না। আমরা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারছি না। আমরা তাদের ঠিকঠাক ভালোবাসতে পারছি না, যত্ন নিতে পারছি না। আমি তাদের ভালো খাবার দিতে পারছি না। তারা কিছু চাইলে, আমি দিতে পারি না।
সেভ দ্য চিলড্রেনের বাংলাদেশ শাখার পরিচালক অনো ভান মানেন বলেন, গত ৩ বছরে কক্সবাজারের শিবিরগুলোয় ৭৫ হাজারের বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে। তারা এমন এক জীবন নিয়ে জন্মেছে, যেখানে তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা সীমিত। নেই চলাফেরার স্বাধীনতাও। আমরা আমাদের শিশুদের বড় স্বপ্ন দেখতে শেখাই। কিন্তু এই শিশুরা কি নিয়ে স্বপ্ন দেখবে। তিন বছর হয়ে চললেও এ সংকটের কোনো সুরাহা হয়নি।
সূত্রঃ সেভ দ্যা চিলড্রেন – ইউএনএইচসিআর।
প্রতিবেদন/বিবিএন