ইউএনও হত্যা চেষ্টা; চুরির উদ্দেশ্য!র্যাব বিশ্বাস করতে পারছে না
শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উওপজেলার ইউএনও’কে হত্যার প্রচেষ্টা মামলার সন্দহভাজন প্রধান আসামি আসাদুল ইওসলাম দায় স্বীকার করেছেন।তার সঙ্গে সান্টু ও নবীরুলও ছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, চুরি করার জন্য ভেন্টিলেটর দিয়ে ঘরে ঢোকেন।তবে ওয়াহিদা জেগে গিয়ে তাদের দেখে ফেলে,চুরিতে বাধা দেয়ায় তার ওপর হামলা চালায়।
র্যার তাদের এই কথা বিশ্বাস করতে পারছে না।ব্যার বলেছে, এই বিষয়ে আরও তদন্ত করার পরই মূল ঘটনা জানা যাবে।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় দুই জন আসামিকে আটক করেছে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ দল।
শুক্রবার ভোররাত ৪টা ৫০ মিনিটে হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে মূল হামলাকারী আসাদুল হক ওরফে আরশাদুল (৩৫) ও জাহাঙ্গীর কে আটক করা হয়। আসাদুল হক ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুরের আমজাদ হোসেনের ছেলে।
হাকিমপুর থানার ওসি ওয়াহিদ ফেরদৌস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাকিমপুর, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানা এবং র্যাব রংপুরের একটি দল যৌথভাবে হিলির কালিগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসাদুল হক ও জাহাঙ্গীর কে আটক করে। আসাদুল এ ঘটনার প্রধান আসামি ইউএনওর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত সেই করেছে। তাদের রংপুরে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে এক থেকে দুই জন ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ২য় তলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ওয়াহিদা খানমের শয়নকক্ষে ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এক পর্যায়ে পাশের কক্ষে অবস্থানরত তার বাবা ওমর আলী শেখ তাহাজ্জদের নামাজ পড়তে ওঠেন।
এ সময় এ দৃশ্য দেখে মেয়েকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। দুর্বৃত্তরা তখন তাকেও হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। হাতুড়ির আঘাতে ওয়াহিদা খানম রক্তাক্ত জখম হন ও জ্ঞান হারান।
এ সময়ে পাশে থাকা তার তিন বছরের শিশুপুত্রের চিৎকার শুনে বাড়ির নাইটগার্ড তার ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। এরপর তার চিৎকারে পাশের ভবনে অবস্থানরত বিভিন্ন অফিসের লোকজন এসে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদা খানমকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে এনে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার বাবা রংপুরে চিকিৎসাধীন।
গতকাল সন্ধ্যায় ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফিরে আসে। রাতে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রাজিউল হক ও নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের নিউরো সার্জন অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় জনের টিম রাত সাড়ে ৯ টায় অপারেশন শুরু করেন। দেড় ঘন্টা ধরে অপারেশন চলে।
অধ্যাপক ডা. রাজিউল হক জানিয়েছেন, অপারেশন সফল হয়েছে। ওয়াহিদা খানম শংকামুক্ত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম জানিয়েছেন, তাকে ৭২ ঘন্টার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এইদিকে,ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় তার বড় ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঘোড়াঘাট থানায় তিনি এই মামলা করেন।
শুক্রবার ভোররাত ৪টা ৫০ মিনিটে হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে মূল হামলাকারী আসাদুল হক ওরফে আরশাদুল (৩৫) ও জাহাঙ্গীর কে আটক করা হয়।
বিশেষ সূত্রে জানা যায় , তারা দু’জন ইউএনওর বাসায় ঢোকেন। সিসিটিভিতে তাদেরই দেখা গেছে।
আরসি/ বে অব বেঙ্গল নিউজ/ স্টাফ রিপোর্টার